মোঃ আব্দুল হান্নান, নাসিরনগর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ঃ জেলার নাসিরনগর উপজেলায় মাদক ব্যবসায়ী স্বামীর দাবীকৃত ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দিতে না পারায় স্বামী ও শশুর বাড়ির লোকজনের শারীরিক, মানসিক নির্যাতনের শিকার তিন সন্তানের জননী ফাহিমা। অবশেষে নিরুপায় হয়ে স্বামী সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা।
ঘটনাটি উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের রুসুলপুর গ্রামে। মামলা সূত্রে জানাগেছে বিগত ১ জুলাই ২০০৮ সালে পার্শ্ববর্তী লাখাই উপজেলার মোড়াকড়ি গ্রামের মুছন মিয়ার মেয়ে ফাহিমা বেগমের সাথে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার ফান্দাউক ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের তাহের মিয়ার ছেলে সেলিম মিয়া সাথে ৭৬ হাজার টাকা কাবিন মূলে ইসলামী শরিয়তের বিধান মতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ফাহিমার গর্ভে মারুফ মিয়া (১০) মাহিন মিয়া (৬) ও তানিশা বেগত (৩) নামে তিন জন ছেলে মেয়ের জন্ম হয়। ফাহিমার স্বামী সেলিম মিয়া একজন কুখ্যাত মাদক ব্যবসায়ী। মাদক বিক্রি করতে গিয়ে কিছু দিন পর পরই সেলিম পুলিশের হাতে ধরা পরে জেল হাজতে যায়। তখন ফাহিমাকেই টাকা জোগার করে স্বামী সেলিম কে জামিনে বের করে আনতে হয়। সম্প্রতি ব্যবসা করার নাম করে ফাহিমার স্বামী সেলিম ফাহিমার নিকট ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে। মেয়ের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে ফাহিমার দরিদ্র পিতা ৫০ হাজার টাকা যৌতুক প্রদান করে। ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে স্বামী সেলিম আবারো ফাহিমার নিকট ২ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবী করে।
ফাহিমা যৌতুকের টাকা দিতে পারবে না বলে অপারগতা প্রকাশ করলে ফাহিমার স্বামী সেলিম মিয়া দেবর কাসেম মিয়া শশুর তাহের মিয়া শাশুরী জোসনা বেগম ও লিলু মিয়া মিলে ফাহিমাকে বেদম মারপিট করে তিনটি বাচ্চা সহ এক বস্ত্রে তার পিত্রালয়ে ফাটিয়ে দেয়। এই নিয়ে এলাকায় বেশ কয়েকটি শালিশ দরবার হলেও ২ লক্ষ টাকা যৌতুক না দিলে ফাহিমাকে নিয়ে ঘর সংসার করবে না বলে জানিয়ে দেয় স্বামী সেলিম। অবশেষে নিরুপায় হয়ে ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ তারিখে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল ১ এ ফাহিমা বাদী হয়ে স্বামী সহ ৫ জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ সংশোধনী ২০০৩ এর ১১(গ)/৩০ ধারা একটি মামলা দায়ের করে। আদালত মামলা টি আমলে নিয়ে, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা নাসিরনগরকে তদন্ত পূর্বক আদালতে প্রতিবেদন প্রেরনের নির্দেশ দেন। অসহায় ফাহিমা আদালরেত ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করছে।