বিয়ের সব কিছুই ঠিকঠাক, আয়োজন হয়ে ছিলো খাবারের। তবে সে খাবার আর খাওয়া হলোনা নবদম্পতির। ছুটতে হয়েছে কর্মস্থলের জন্য। বিয়ের পরে বাড়িতে তো থাকা হলো না তাই আশা ছিলো অন্তত নতুন বউকে লঞ্চের কেবিনে করে নিয়ে যাবে (বর) রাসেল। সে আশাও পুরণ হলোনা রাসেলের। ঈদে কর্মস্থলমুখী মানুষের চাপে কেবিন না পাওয়ায় অবশেষে লঞ্চের ছাদেই ঠাঁই হয়েছে নবদম্পতির।
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বলতে আকদ পর্যন্ত হয়েছে। লকডাউনের কারণে আর আতিথেয়তার সম্ভব হয়নি। বিয়ের খাবার না খেয়েই ছুটতে হয়েছে কর্মস্থলের জন্য। নতুন বউ নিয়ে লঞ্চের কেবিনে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল রাসেলের। তাও হলো না। অস্বাভাবিক যাত্রীর চাপে শেষে লঞ্চের ছাদেই ঠাঁই হয়েছে নবদম্পতির।
বরিশাল নদীবন্দরে কথা হয় নববিবাহিত রাসেলের বোন পারভিনের সঙ্গে। জেলার উজিরপুর উপজেলার ওটরা ইউনিয়নে তাদের বাড়ি।
পারভিন বলেন, বিয়ের কথাবার্তা ঠিক ছিল গত ঈদে। কিন্তু তখন লকডাউন পড়বে দেখে বিয়ের আয়োজন করা হয়নি। এরপর উভয় পরিবার মিলে সিদ্ধান্ত নেয় কুরবানির ঈদে। আমরা ভেবেছিলাম আগের ১৪ দিন লকডাউন দেওয়ায় কুরবানির পর লকডাউন দিবে না। এজন্য ঈদের পরদিন বিয়ের আয়োজন করা হয়।
গতকালও জানতাম না আগামীকাল শুক্রবার থেকে আবার লকডাউন দিবে। আজ দুপুরে শুনেছি তখন কেবল আকদ হয়েছে। আয়োজন ছিল খাবারের। কিন্তু লকডাউন ঘোষণার পরপরই খাওয়া-দাওয়া না করেই নতুন বউ নিয়ে ঢাকা রওয়ানা দিয়েছি। যেতে কষ্ট হবে। কিন্তু কিছু করার নেই।
রাসেল ঢাকায় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলসম্যানের কাজ করেন। নব পরিণীতা স্ত্রীর বাড়ি পাশের ইউনিয়নে বললেও নাম বলেননি রাসেল।
রাসেল বলেন, চেষ্টা করেছি লঞ্চে একটি কেবিন সংগ্রহ করার। কিন্তু পাচ্ছি না। নতুন বউ নিয়ে এভাবে খোলা আকাশের নিচে যেতে কেমন দেখায়! আর একটা দিন পরে লকডাউন দিলে আর সমস্যা হত না। না পারলাম কোরবানির মাংস খেতে, না পারলাম শান্তিতে বিয়ের কাজটা সম্পন্ন করতে।
অনলাইন সংস্করণ