বিশেষ প্রতিবেদক:———–
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় ১৭ জনকে বহিষ্কার করেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ। তবে বহিষ্কার সুপারিশের তালিকায় সমর্থক হিসেবে তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
৮ ডিসেম্বর বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট তানবীর ভূঞা স্বাক্ষরিত পত্রে এ তথ্য জানানো হয়।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৭ ধারার উপধারা ‘ক’ তে বলা আছে, কোনো সদস্য আদর্শ, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য, গঠনতন্ত্র ও নিয়মাবলি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থপরিপন্থি কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করলে তার বিরুদ্ধে দল ব্যবস্থা নিতে পারবে।
আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে সমর্থককে বহিষ্কার করা যাবে, এমন কথা কোথাও লেখা নেই। সমর্থক উল্লেখ করে বহিষ্কারের পত্র টি প্রকাশ হওয়ার পর এ নিয়ে উপজেলায় হাস্যরসের সৃষ্টি হয়েছে। অবাক হয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন বহিষ্কৃতরা।
বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের বহিষ্কারের সুপারিশের তালিকায়, বুধন্তি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন খান, বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের জসিম উদ্দিন চৌধুরী ও হরষপুর ইউনিয়নের মো. শাহজাহানকে আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমি ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের সাবেক সভাপতি। বর্তমানে আওয়ামী লীগ বা কোনো অঙ্গ সহযোগী সংগঠনে আমার সদস্য পদ নেই। তবে আমিসহ আমার পরিবার জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থক। দলের কোনো সদস্যপদ না থাকার পর কীভাবে আমাকে বহিষ্কার করেছে, তা আমার বোধগম্য নয়।’
আরেক বহিষ্কৃত স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমি গত নির্বাচনেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশ নিয়েছি। এবারও তা করতে চেয়েছিলাম। তবে দলের আশ্বাসে দলীয় প্রতীক পাওয়ার আশায় মনোনয়ন কিনি। অথচ আমাকে মনোনয়ন দেয়নি। পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমি তো ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সমর্থক হিসেবে উল্লেখ করে বহিষ্কারের সুপারিশ করা হয়েছে কেন?’
বহিষ্কার করা আরেক সমর্থক বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী জসিম উদ্দিন চৌধুরীকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে তার ছেলে ড. রাহুল চৌধুরী বলেন, আমার পরিবারের সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক। আমার বাবা আওয়ামী লীগের কোনো পদ বা সদস্য নন। এরপরও আমার বাবাকে বহিষ্কার করলো কীভাবে?
বিজয়নগর আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট তানবীর ভূঞা বলেন- বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সুপারিশের ভিত্তিতে তাদের বহিষ্কার করেছে জেলা আওয়ামীলীগ। একাধিকবার দলের পক্ষ থেকে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের জন্য অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা তা প্রত্যাহার করেননি। তাই দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করায় তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, সদস্য না হয়ে সমর্থক হলেও বহিষ্কার করা যায়। তারা দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিল। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে সুপারিশ করা হয়েছে বলে তাদেরকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
অনলাইন সংস্করণ: এম এ/বিএন